আনুপূর্বিক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আনুপূর্বিক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪

আনুপূর্বিক (নিবন্ধ/প্রবন্ধ)

(১)

প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, প্রতিক্রিয়া
সায়ন চক্রবর্তী

Aanupurbik 1


খাস উত্তর কলকাতার বুকে একটা হাসপাতাল। এই হাসপাতালের অনতিদূরে খয়েরি ঘোড়ায় সওয়ার নেতাজি পাঁচমাথার মোড়ের দিকে নজর রেখে আসছেন আমার আজন্মকাল। পাঁচদিকে ছুটে চলা পাঁচটা পথ, কলকাতার ধমনী, শিরা, উপশিরা বেয়ে রক্তের মতো বয়ে নিয়ে গেছে শহরের স্পন্দন। নেতাজি কী কী করেছেন, কী কী পারেননি – সে আলোচনা আজকের পরিসরের নয়। তবু নেতাজির সম্পর্কে যে অসংখ্য ফোকলোর আজ এত বছর পরেও আমাদের মধ্যে বেঁচে আছে, তার একটা আজ বড় প্রাসঙ্গিক মনে হল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই উত্তাল পৃথিবীতে মানুষের জীবনের মূল্য ছিল আজকের বাজারের মুরগির চেয়েও কম। পরিকল্পনার জন্য, সেই পরিকল্পনার রূপায়ণের জন্য হাজার হাজার মানুষকে আহুতি দিতে কেউই দুইবার ভাবতেন না। অবশ্য পুরোহিত কবেই বা যজ্ঞের বলির মহিষ গুনেছেন!!! পুরুষদের শুধু প্রাণ যেত, অথবা তাদের কায়িক শ্রম নিংড়ে বার করে নিয়ে তাদের বাঁচিয়ে রাখা হত গোয়ালঘরের মোষের মতো, যাতে কাল আবার তারা হাল টানতে পারে।
কিন্তু নারী??? তারা যে শুধু দাসী নয়, যৌনদাসত্বও যে যুগে যুগে কালে কালে সকল অনিশ্চিত সময়ে তাদের কপালে লিখে দিয়েছে শিশ্নদর্পী পুরুষ। নারীর ভবিতব্য সে ভয়ঙ্কর জ্বলন্ত সময়ে কী হয়েছিল, তা যাঁরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে কিছুটা পড়াশোনা করেছেন, সবাই জানেন।
শোনা যায়, নেতাজী নাকি আজাদ-হিন্দ-ফৌজের সৈনিকদের ডেকে বলেছিলেন, কোনো অবস্থাতেই যেন তারা কোনো নারীর গায়ে হাত না দেয়। যদি কাউকে দিতে দেখে, তবে সে নিজের সৈন্যবাহিনীর হলেও তার নামে একটি বুলেট লিখে দিতে কেউ যেন দ্বিতীয়বার না ভাবে।
সেই নেতাজী ঘোড়ার অপর অসহায় বসে জানতে পারলেন, অনতিদূরে হাসপাতালে এক কর্তব্যরত নারী চিকিৎসককে তার নারীজন্মের চরমতম শাস্তি দিয়েছে মানুষের মতো দেখতে কিছু হায়নার দল। সেদিন সেই অপমানে সে মাথাও কি নেমে এসেছিল কিছুটা, যে মাথাকে ইংরেজ শাসন শত চেষ্টাতেও কখনো নোয়াতে পারেনি?


ধর্ষণ এ সমাজে নতুন নয়। সভ্যতার আদি থেকে তা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। খবরের কাগজের ভেতরের বা বাইরের পাতায় মাঝে মাঝেই উঠে আসে বিভিন্ন ঘটনা। বহুক্ষেত্রেই মানুষ ভ্রূ কুঁচকে পরের পাতায় চলে যান, বা ফেবুতে রেখে যান নাগরিক কর্তব্যপালনের চিহ্নস্বরূপ একটি পোস্ট। তবে এবারের এই আর.জি.করের ঘটনায় মানুষের প্রতিবাদ এত তুমুল, এত ব্যাপক কেন? কেন এই অস্থিরতা, কেন এই তীব্র ক্ষোভ দানা বেঁধেছে, যার আঁচ পৌঁছে গেছে নবান্নের সর্বোচ্চ তলের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষেও? পার্ক স্ট্রিট, বারাসত, কামদুনিতে তো এমন ঘটেনি। মানুষ প্রতিবাদ করেছেন, সহমর্মিতা দেখিয়েছেন, কিন্তু পথে নামেননি। ইংরেজির দুটো শব্দ ব্যবহার করি- সিমপ্যাথি ছিল, এমপ্যাথি ছিলনা।
আসলে এই ঘটনা মানুষকে শ্রেণীচরিত্রের দিক থেকে আঘাত করেছে। মধ্যবিত্ত, বাঙালি পরিবারের একটি মেধাবী মেয়ে, যে ডাক্তারিতে সুযোগ পেয়েছে – এ আমাদের রাজ্যের আপামর নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবারের এমন এক স্বপ্ন – যাকে ছোঁবে বলে একটি গোটা পরিবার যুদ্ধ করে। মেয়েটি বা ছেলেটি দিনরাত পড়াশোনা করে, তার মা ও বাবা সকল দৈনন্দিনতার যুদ্ধে নিজেদেরকে সামনে এগিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে সেই সুযোগ করে দেন, যাতে মেয়েটি ধাপের পর ধাপে পা ফেলে সফল হয়ে উঠতে পারে। তাই যখন সেই উত্তরণের সিঁড়িতে উঠতে থাকা মেয়েটি ধাক্কা খায় – আমাদের শ্রেণীচরিত্র আহত হয়। নিত্যদিনের ঘষটা খাওয়া, শ্যাওলা ধরা একতলার পৃথিবী থেকে একদিন আলো-বাতাস যুক্ত তেতলার ঘরে এসে বসবার যে স্বপ্ন একটা গোটা শ্রেণী লালন করে, তার বুকের ভেতর হৃৎপিণ্ড উপড়ে আনা হয়।
তখন মানুষের রাগ দানা বাঁধে। একটি শিশুর রাগ হলে সে যেমন হাত ছোঁড়ে, পা ছোঁড়ে – কী করবে ভেবে পায়না, এমন এক ঘটনার পরে একটা গোটা শহর আঁচড়ে উঠতে চায় ক্ষমতার দেয়াল, কামড়ে ছিঁড়ে নিতে চায় দম্ভের মেদ।
ঠিক এই সময়েই ঝড় উঠেছে। মধ্যবিত্ত মানুষ, যারা সারাজীবন সব বিপ্লবের থেকে দূরে, সকল ঝড়ের মধ্যে নিজের ঘরের চালটুকু আগলে রাখতে চায়, আজ তারা হাত মুঠো করে এগিয়ে এসেছে। প্রতিবাদের উৎসবে গলা মিলিয়েছে চেনা-অচেনা, নারী-পুরুষ। যে রাতে শহর মধ্যরাতের দখল নিতে রাস্তায় নামল, আমাদের মধ্যের বেড়াগুলো যেন অন্তত এক রাতের জন্য মড়মড় করে ভেঙে পড়ার শব্দ পেলাম।


প্রশাসন কি এই আন্দোলন দমন করতে পারেনা? হয়তো পারে, হয়তো পারেনা। এর উত্তর সঠিকভাবে কেউ জানেনা। ইতিহাসে এর পক্ষে বিপক্ষে দুইদিকেই প্রচুর উদাহরণ রয়েছে। যে সোভিয়েত গত শতাব্দীর পাঁচের ও ছয়ের দশকে একাধিকবার সামরিক ক্ষমতায় গণ-আন্দোলন দমন করেছিল, সে-ই কিন্তু আটের দশকের শেষে এসে আর পারেনি তা করতে। দিকে দিকে সোভিয়েতের এক সময়ের অংশীদারেরা স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল – হাঙ্গেরি, চেকোশ্লোভাকিয়া, কাজাখস্তানে – মস্কো থেকে কোনো ট্যাঙ্ক তাদের দিকে আসেনি, চলেনি কোনো গুলি। মানুষের দাবীতেই ক্রেমলিনের চুড়ো থেকে অপসারিত হয়েছিল সত্তর বছরের লাল পতাকা। আবার প্রায় একই সময়ে, চীন কিন্তু পেরেছিল তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ার ঘটাতে। দেশের মানুষের ইচ্ছে-অনিচ্ছের তোয়াক্কা না করে বন্দুকের নলের ওপর ভিত্তি করে রূপায়ণ করতে পেরেছিল এক-সন্তান নীতি – কোনো বিপ্লব সে শ্বাসরোধী শাসনযন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেনি। তাই এই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। শাসকের দমন বনাম মানুষের স্বপ্ন – এই যুদ্ধে এক এক প্রান্তরে এক এক পক্ষ জয়ী হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের কথা ধার করে বলি, শেষ নাহি যে, শেষ কথা কে বলবে?


সাধারণ নাগরিক হিসেবে চিন্তার কোনো কারণ কি নেই আপনার-আমার? আছে আছে। গণ-আন্দোলনের চরিত্র এমন, মানুষকে ধরে রাখতে তাকে প্রতিদিন নতুন কর্মসূচীর জন্ম দিতে হয়। তাই মেয়েটির ন্যায়বিচারের জন্য যে আন্দোলনের সূচনা, তার চরিত্র এভাবে পরিবর্তিত হয়ে চলেছে, যে এখন প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের রদবদলও দাবীর মধ্যে ধীরে ধীরে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের পরিবর্তন কিন্তু আমরা দেখছি, দেখেছি। বিপ্লবের শব্দবন্ধ মানুষের কাছে যতই রঙিন স্বপ্নের জন্ম দিক না কেন, মনে রাখতে হবে তা হয়তো বহুক্ষেত্রেই যুদ্ধের বীরগাথার মতো প্রশস্তিমূলক। যুদ্ধে শেষ অবধি থেকে যায় অগণিত মৃতদেহ, আহত সৈনিক আর বিচ্ছিন্ন পরিজন। বিপ্লব কিন্তু তার চেয়ে খুব দূরে নয়। আমাদের মতো সাধারণ যে মানুষ শহরের ট্রামে, বাসে ভীড় হয়ে ওঠে, তাদের হাতে দিনের শেষে থাকে শুধু একটা সংবিধান, আর তার দেওয়া কিছু অধিকার। সেই সংবিধানটি রক্ষা না করতে পারলে আমাদের হাতে শুধু পেনসিল থেকে যাবে। রাজনৈতিক দল পরিযায়ী পাখির মতো আসে এবং যায়, তাদের সুবিধাভোগীদের মুখ বদলায়, রূপ বদলায়না; কিন্তু পরিযায়ীরা যে হ্রদে এসে নামে, তার পাশের গাছের মতো সারাজীবন থেকে যাই আমরা। তাই দলের প্রতি ক্ষোভ থেকে সংবিধানকে অতিক্রম করা, পাখিকে নামতে না দেওয়ার জন্য হ্রদ শুকিয়ে ফেলার মতো আত্মঘাতী। ফরাসি বিপ্লবের পরের দশ বছর থেকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা – উদাহরণ আমাদের সামনেই রয়েছে। গণতন্ত্র ছাড়া জনতার আর কিছু নেই, থাকতে পারেনা।


রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিক পদ্ধতিতেই হয়। সকল প্রতিবাদ পেরিয়ে একজন মানুষ যখন ইভিএমের সামনে পৌঁছন, তখন বেছে নিতে হয় রাজনীতিই। ই.ভি.এম. অরাজনৈতিকতা বোঝেনা।
প্রতিবাদ হোক, প্রতিরোধ হোক, গণতন্ত্রের মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষা হোক। তবু, রাজনীতি নির্বাচন করুন, সন্তর্পণে, ঠাণ্ডা মাথায়, ভেবে, অনেক ভেবে।
একটি পংক্তি ধার করি আবার। এবার ঋত্বিক ঘটকের থেকে-
“ভাবো, ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো।”


(২)

বিচার চাই
অয়ন দাস


Aanupurbik 2


সাধারণ মানুষ স্বভাবগত ভাবে সহনশীল ও শান্তিপ্রিয়। তারা শাসককে ভয় পায় এবং ভয় পেয়ে মুখ বুজে যাবতীয় অত্যাচার সহ্য করে।শাসক আরও অত্যাচার শুরু করে। তখন মৃদু অসন্তোষ প্রকাশ করে সাধারণ মানুষ। শাসক পাত্তা দেয় না।শাসক মজা করে বলে - একটু আধটু বিরোধিতা না থাকলে কি খেলা জমে!
অত্যাচার আরও বাড়ে।আরও আরও আরও বাড়ে।একসময় ভয় পেতে পেতে মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়।দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরও যখন সে অত্যাচারিত হতে থাকে তখন সে ফুঁসে ওঠে। তখন তার মন থেকে যাবতীয় ভয় উধাও হয়ে যায়। আশ্চর্য হাল্কা বোধ করতে থাকে সে। তখন একটা ছোট্ট দেশলাইয়ের কাঠি থেকে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন।সেই আগুন নেভানোর ক্ষমতা আর শাসকের থাকেনা।শাসকের যাবতীয় অস্ত্র তখন ভোঁতা হয়ে যায়।


কেন জানিনা আজকের পশ্চিম বাংলার অবস্থা দেখে আমার এই কথা মনে হচ্ছে।


সমস্ত প্রমাণ লোপাট করে তবে সিবিআইয়ের কাছে গেছে কেসটা।সিবিআই এর আবার রেকর্ড রয়েছে কোনো কেসের সমাধান সূত্র না বের করতে পারার।সুতরাং প্রকৃত খুনিরা যে শাস্তি পাবেনা এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত।


তাহলে কী হবে?


শাসক-বিরোধী...বিরোধী-শাসক..শাসক-বিরোধী...বিরোধী-শাসক - এইরকম একটা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা হবে।যুদ্ধে বিরোধীদের দুই এক গোলে হারিয়ে শাসক জয়ী হবে এবং....।


তবু এই নিকষ কালো আঁধারেও কিছু আলোর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।


কীরকম ?


১) তিলোত্তমার বাবা মা মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া দশ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাদের মেয়ের প্রাণের মূল্য যে দশ লাখ টাকা নয়, তা বুক চিতিয়ে বলার হিম্মত দেখিয়েছেন তাঁরা। আপনাদের স্যালুট ! আপনার মেয়ে ঘুমিয়ে আছে কিন্তু কোটি কোটি মেয়েকে সে জাগিয়ে দিয়ে গেছে। সেই মেয়েরা আপনাদের পাশে আছে।


২) সোসাল মিডিয়ার নামে যতই গালাগালি করি, সোসাল মিডিয়া দেখিয়ে দিয়েছে কী সাংঘাতিক ক্ষমতাশালী সে। আজ সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাকে বিপথে পরিচালনা করার দিন শেষ হয়ে গেছে।মাত্র একজন মানুষ নিজের ওয়ালে খুব ক্যাসুয়ালি একটা ডাক দিয়েছিল - চলো আমরা মেয়েরা রাত দখল করি( দখল শব্দটা নিয়ে আবার শাসক দলের নেতাদের ভীষণ আপত্তি। একজন বলেছেন - হুঁঃ..যারা বরকে সামলাতে পারেনা,পাশের বাড়ির লোককে ডেকে আনে তারা করবে রাত দখল!) হ্যাঁ মেয়েরা রাত দখল করেছেন। মেয়েরা নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই রাত দখলের।পিছনে তাদের সমর্থনে এগিয়ে গেছেন পুরুষেরা।এই ঐতিহাসিক মিছিল,সমাবেশ কোনো রাজনৈতিক দলের মদতে হয়নি।আমি নিজে হেঁটেছি সেই মিছিলে।দেখেছি - সেই মিছিলে বিচারের দাবিতে গলা ফাটাচ্ছেন বহু শাসক দলের সমর্থক। এখানেই সরকারের পরাজয়।প্রত্যেক ব্যক্তি মানুষ নিজের ভয়ের থেকে মিশে যেতে চেয়েছেন এই জনতা পিন্ডে।সামিল হয়েছেন এই স্বতঃস্ফূর্ত গন আন্দোলনে। যারা বলছেন - একটা মিছিলে কিস্যু হবেনা, তাদের বলি এই যে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার সাহস পেলো মানুষ, এই যে নিজের ভেতরের রাগ, অপমান, অসহায়তাকে অনেক মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারলো "ইডিয়ট কমন ম্যান" - এর ফল কিন্তু ভয়ংকর হতে পারে।


৩) বুদ্ধিজীবীদের ভন্ডামি, স্বার্থপরতা,ন্যাকামি মানুষ ধরে ফেলেছে এবং প্রকাশ্যে তাদের অপমান করতে মানুষ আর ভয় পাচ্ছে না।যে সব সেলিব্রিটি সরকারের সমর্থনে কথা বলেছে তারা যে কী পরিমাণ ট্রোল্ড হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।ইতিহাস সাক্ষী বুদ্ধিজীবীরা চিরকাল সরকারের হয়ে কথা বলেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। অবাক করেছে মানুষের সাহস।


৪) সরকার ভয় পেয়েছে।ভয় পেয়েছে কারণ এই ঘটনা চোখ খুলে দিয়েছে। প্রতিটি হাস্পাতালেই যে সেক্স র‍্যাকেট চলে,ড্রাগ র‍্যাকেট চলে, ঘুষের বিনিময়ে পাশ করানোর ঘৃণ্য অপরাধ চলে এবং সরকার যে জেনেশুনে চোখ বুজে থাকে, একটা নেক্সাস ও স্বজন পোষণ যে বহুদিন ধরে চলে আসছে এবং তা মানুষের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে,এবং এই সামান্য স্ফুলিঙ্গের থেকে যে দাবানল জ্বলে উঠতে পারে সেই ভয় সরকার পেয়েছে।মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগকে সরকার ভয় পেয়েছে।সোসাল মিডিয়াকে ভয় পেয়েছে সরকার। তাই গতকাল মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাইবার ক্রাইমে গ্রেফতার করবার।এতদিন পরে বাধ্য হয়ে মহিলা সাংসদদের মুখ দেখা গেছে।


আপনারা প্লিজ আয়নার সামনে একবার দাঁড়ান।


এবার হাসপাতাল ভাঙচুরের বিষয়ে কিছু কথা বলি। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই যে হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে "রাম" ও "বাম" তাহলেও সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারেনা।পুলিশ কী করছিলো? কেন হামলা থামাতে অপারগ হলো? কেন ইন্টেলিজেন্স ফেলিওর হলো? কেন পুলিশকে নার্সদের লেডিস টয়লেটে গিয়ে লুকিয়ে থাকতে হলো?


কেন? কেন? এবং কেন?


এরপরে পুলিশের ওপর বিশ্বাস থাকে? আস্থা থাকে? আমি জানিনা।


বড় কষ্ট হয়, বড় হতাশ লাগে, বড় কান্না পায়।


বামফ্রন্টের অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে,বিপুল জন সমর্থন নিয়ে যারা ক্ষমতায় এলো,যারা বললো - বদলা নয় বদল চাই... তারা নিজেরাই আজ বামফ্রন্ট এর মেধাবী ছাত্র।তারা নিজেরাই আজ নব্য শোষক।একমাত্র ভবিষ্যৎ বলতে পারবে কবে এই শোষকদের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।তারপর আবার কোনো অত্যাচারী শোষক আসবে কিনা তা-ও বলতে পারবে ভবিষ্যৎ।


এদের সবাইকে কিন্তু ইতিহাস তার তুলাদন্ডে বিচার করবে।ইতিহাস কিন্তু কাউকে ক্ষমা করে না।




এ তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে এলে সেলুকাস!


দেখো আগুন জ্বলছে ধিকিধিকি, গুমরে উঠছে ক্রোধ।চিৎকার করছে বিশু পাগল।রাজ অন্তঃপুরে জেগে উঠেছে অতন্দ্র প্রহরীর সতর্ক চোখ। রঞ্জন!! চিৎকার করে উঠলো নন্দিনী। ভয়ে কেঁপে উঠলো রাজপ্রাসাদ। অলিন্দ থেকে বুক ফাটা হাসি হাসে প্রেতাত্মা চোখ।বন্দী পাখিটা তার আহত ডানা ঝাপটাতে থাকে।কয়েক ফোঁটা রক্তের গন্ধে রাত নেমে আসছে রাজপ্রাসাদে।


অপেক্ষা করো...একটু পরেই সারি সারি জ্বলে উঠবে মশাল।

শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪

আনুপূর্বিক | তৈমুর খান



ব্যক্তিপ্রচ্ছদেই অনন্তের বিনির্মাণ


হাল্কা রোদ্দুরে পিঠ পেতে বসেছি। সকালের চাট্টি ভেজা ভাত খেয়ে কবিতা লিখব। একে তো শীতকাল। সূর্য কুয়াশার  ভেতর বাঁশি বাজাচ্ছে। কী সুন্দর হলুদ বাঁশি। আমার চারপাশে গ্রামীণ জীবন। রোদ পোহানো, আগুন পোহানো সকাল। এসবই লিখব। লিখতে লিখতে নগর জীবনের জটিল আনন্দে আমি ঢুকে যাব। আহা, কী সুন্দর আনন্দ! মেয়েরা উড়ছে। উড়তে উড়তে এ ছাত ও ছাত ফুলের টবে টবে ফুটছে। আমি কিছুতেই ওদের ধরার মন্ত্র জানি না। আমি হাঁ করে গ্রামীণ মাটির দাওয়ায় বসে বসে লিখব ওদের।

    নিবেদন কত দূর যাবে জানি না, এরকমই একটা সময় পেরিয়ে এসে আমি সেইসব কবিতাদের দেখতে পাই। আমার বদলে কেউ কেউ লিখে দিয়েছে। এই রক্তগঙ্গা বয়ে যাওয়া পৃথিবীতে এখনও কেউ কেউ পিঠ সেঁকে নিচ্ছে সূর্যের আলোয় আর মানবিক কবিতা লিখছে। ভবিষ্যৎ কুয়াশাময় তবু মানবিক সূর্যের বাঁশি শুনতে পাচ্ছে। নগর জীবনের জটিল প্রেমমুখর সময় থেকে গ্রামীণ জীবনের নির্জন ও কোলাহল কবিতায় মিশে যাচ্ছে। আমি তখন সেইসব কবির লেখায়, তাঁদের শব্দবোধে, তাঁদের আত্মিক নিবেদনে ডুবে যাচ্ছি। দুঃখের খই ফুটছে চারপাশে। হাত পেতে বলছি—তাই দাও—। আনন্দের তাকানো একবার দেখতে পেয়ে মনটা ভরে যাচ্ছে। কী সুন্দর চোখের দৃষ্টি। নীল ভুরু। পদ্ম পদ্ম মুখ। মুহূর্তকে ডেকে দেখাচ্ছি। হ্যাঁ, এখনও পৃথিবীর চায়ের দোকানে সুন্দরেরা আড্ডা দিতে আসে। রাজনীতি, ফলানানীতি, তস্যনীতি নিয়ে অনেক আলোচনার ঝড় ওঠে, তার মাঝেও সুন্দর চুপচাপ বসে থাকে। দেখলে মায়া হয়। তার পকেটে বাজারের ফর্দ। এত হৈ চৈ ভিড়ের ভেতরে থেকেও সে 'নতুন লেখা' খোঁজে—


"কীভাবে নতুন লেখা হবে ভাবি, আর

রোদ্দুর ঘুরে যায় ছাতের আলসেতে 

 দূরের স্টেশনে দেখি সন্ধ্যা নেমে আসে


সাত-পাঁচ ভেবেটেবে একটু বেরোই 

কিছু দূরে পৃথিবীর চায়ের দোকান 

পাড়ার বখাটে ছেলে, মাস্টার, দালাল...

বামকথা, রামকথা, অর্থকথা ওড়ে 

পৃথিবীর ফর্দ ওড়ে বুকের পকেটে”


(পার্থপ্রতিম মজুমদার)


'হয়ত পিয়াল তুমি জান' কাব্যের এই কবিতাটিতেই কবি যে নতুন লেখার কথা বলেন তাঁর জীবন থেকেই নেমে আসা কোনও সকালের কথা। বেলা যাওয়া রাতের অন্ধকার নেমে আসছে। নানা কূটতর্কে এবং বস্তু চাহিদার ফর্দ নিয়ে আমাদের দিন চলে যাচ্ছে। এর মধ্যেই নতুন লেখা যেন নতুন ঈশ্বরের মতো। কেননা প্রকৃত নতুন লেখাতেই মননের উত্তরণ ঘটে। কবি নিজেকেই গড়ে নেন। র‍্যাঁবো কবেই বলেছিলেন "The poet makes himself a visionary by a long, immense and reasoned derangement of all the senses." 


অর্থাৎ সমস্ত ইন্দ্রিয়ের দীর্ঘ, সীমাহীন এবং পদ্ধতিগত বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে একজন কবি নিজেকে স্বপ্নদর্শী করে তোলেন। 

সুতরাং কবিদের অন্তর্দৃষ্টি ও বোধের নিরন্তর পরিবর্তনটি ব্যক্তির উপরেই নির্ভর করে। নতুন কবিতার ধারণাটিও তাই স্থির নয়। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তা পরিবর্তনশীল। উড়ে বেড়ানো মেয়ের মতোই ছাতে ছাতে কবিতাও উড়ে বেড়ায় – visionary by a long, immense তো এটাই। তা ফুলের টবে ও ঢুকে যায়। আকাশের পাখিও হয়ে যায়।

      স্বয়ংক্রিয়তা বা Automatic Writing-ও কবিতা লেখায়। এক ঘোরের মধ্যে কবি চলে যান। তখন সমস্ত বিস্ময়ের পাশে বসে কবি হৃদয় খোলেন। অব্যক্ত কথাগুলি সংকেতের মেঘ, পাখি, নক্ষত্র, জেনাকি, আগুন হয়ে উড়তে থাকে। দু-একটি কথা দারুণ রাগিও হয়। তারা সাপ হয়ে ফণা দোলায়। নির্জনের মাঠে খেলা করে। জীবনানন্দ দাশের অব্যক্ত কথারা, অথবা বাসনারা তো 'ঘোড়া' এবং 'শিয়াল' হয়ে গিয়েছে। এইসবই একজন নতুন কবির কাছে নতুন ভূমিকা। তিনি ভাবেন—


"কীভাবে উন্নতি হবে আমার কবিতা ও গদ্যের;

এই কথা ভাবি আর শুয়ে শুয়ে কলম চালাই।"

(সুকৃতি)


কবি 'নাস্তিকের কাব্য' লিখতে গিয়ে প্রথমেই শুয়ে শুয়ে কলম চালানোর কথা বলেছেন। 'শুয়ে শুয়ে' Automatic Writing-এর-ই ইংগিত দেয়। কবিতার ও গদ্যের উন্নতি অর্থাৎ ভিন্নতা যে এভাবেই সম্ভব তা কবি জানেন। তাই 'বিচ্ছিন্ন  চিন্তার নিচে ঢাকা পড়ে থাকেন। জীবন উদোম হয় সমস্ত ডানা খুলে। যেন প্রস্তুতি— "in a way approaching the condition of automatic writing." টি. এস. এলিয়টের এই কথাটি আজও সত্যি। সংকেতে বেজে ওঠা প্রেম, প্রেমের কষ্ট আজও জোরালো করে ধরে কবিতা।

      নতুন কবিতা এবং নতুন কবি যেভাবে তাঁদের দৃষ্টি ও পথ পাল্টে নেন, অনুভূতি ও চিত্রকল্পের, ভাষা ও শব্দবোধের প্রয়োগও পাল্টে দেন তা সূক্ষ্ম ব্যাপার। নৈঃশব্দ্যের বাতাবরণে গভীর এক ব্যঞ্জনাময় ভাষাহীন ব্যাখ্যাহীন ঐশ্বর্য যেন বিরাট বিস্ময় নিয়ে দেখা দেয়। 'কবি'র পরিচয় দিতে গিয়ে অরিন্দম নিয়োগী তাঁর 'ভূপাখি ভস্মপাখি' কাব্যে লিখেছেন—


"আজ নৈঃশব্দ্যের শিখর বালি ও ছাই মেখে আছে 

 লোহা তার পড়ে রয়েছে রোমশ উঠানে 

 এখানে শ্রাবণ তবু ফিরে ফিরে আসে 

 বাউলের ভূমিকায়, ঝরে পড়ে চুল 

 চুলের ভেতর অন্তহীন বসে থাকা, বসে বসে

 নির্ভার সিঁড়ির আলো ও ছায়ায় ক্রমশ ডুবে যাওয়া 

 যে জানে এইসব তন্ত্রের ব্যবহার,অবগাহনের মানে

সেই কবি, তার জন্য বজ্রনিশান, 

 সমস্ত পিপাসার বোবা আয়োজন"       


কবিতাটিতে যে ভাবনার সন্নিবেশ ঘটেছে তা বাস্তবের কোনও সচরাচর বোধ থেকে আসা ভাবনা নয়, তীব্র নৈঃশব্দ্যে ডুবে গেলে যে অন্তর্দৃষ্টি জেগে ওঠে, নিজের যেভাবে ইচ্ছার বিনির্মাণও করে নেওয়া যায় এই তন্ত্রের ব্যবহারের কথা কবি বলেন। তাই ঝরে পড়া চুলের ভেতর অন্তহীন বসে থাকা, নির্ভার সিঁড়ির আলোয় উত্তরণ পাওয়া একজন কবিরই কাজ। তার জন্য বজ্রনিশান এবং সমস্ত পিপাসার বোবা আয়োজন অপেক্ষা করে থাকে। বজ্রনিশান এবং বোবা আয়োজন বিশেষণ দুটিতে আছে পরম বিস্ময় কিন্তু প্রখর এক ব্যাপ্তি, যা জীবন জুড়েই বিরাজ করে। কার্লাইল বলেছেন, "Silence is more eloquent than words." বিবৃতির ভাষণের চেয়ে নীরবতা অনেক বেশি অর্থব্যঞ্জক একথা কবি বোঝেন। তাই নৈঃশব্দ্য নিয়েই তাঁর যাত্রা শুরু হয়। ভূপাখি ভস্মপাখি পার্থিব জীবনেরই নির্জ্ঞান ব্যত্যয়—একথা ভুলে গেলে চলে না।

         শীতের রোদ্দুরে চাট্টি ভেজা ভাত খেয়ে যে কুয়াশার বাঁশি শুনতে শুনতে কবিতার কথা ভাবছি সে-তো লেখা হচ্ছে। গ্রামীণজীবন থেকে শহুরে জীবনের অন্বয়গুলি প্রবৃত্তিরেখায় বেজে উঠছে। দৈনন্দিন জীবনচর্চার রুটিনে কিছুটা তফাত থাকলেও রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের স্রোতে সবাই ভাসমান। সেখান থেকেই কিছু মণিমাণিক্য তুলে এনে জীবন সাজাই। সাজো, সাজো জীবন। কবিতা তো এই সজ্জারই বাতাবরণ। বুক ফেটে তখন অর্জুন সিকদার 'প্রতিবাদের লেখাগুলি' ছুঁড়ে দেন আমার কণ্ঠে। কণ্ঠ বেজে ওঠে। হাওয়াও ওঠে। ঘোষণা হয়। যে নীরবতা স্তব্ধতার ধ্যান শেখাত, সেই নীরবতাও সরে গিয়ে আনে মুখরতা, উচ্চকিত ঘোষণা, ঘোষণার আবেদন—


"এস হে বজ্রনির্ঘোষের বসন্ত 

 একবার অন্তত লালন কর আমাকে 

 হাতে তুলে নি স্বপ্ন-সময়ের রাইফেল



সেফটি ক্যাচ অন্ 

পার হয়ে যাই ইতিহাসের চেকপোস্ট।"


বসন্ত বজ্রনির্ঘোষের হলেই তো সমারোহ শুরু হয়। সেখানেই লালিত হতে চাই। কুয়াশায় আছি বলেই তো বসন্তের আকাঙ্ক্ষা। হাতে স্বপ্ন-সময়ের রাইফেল তুলে নিয়ে হতাশা আর বেদনার সঙ্গে লড়াই করা যায়। সামাজিক-রাষ্ট্রনৈতিক অশুভর বিরুদ্ধেও দাঁড়ানো যায়। ইতিহাসের চেকপোস্ট পার হতে হলে তো লং-মার্চ করেই সৈনিক কবিকে পার হতে হবে। চাই উচ্চকিত অনুরাগ দরকার। না হলে তো জীবন সংরাগ ও মুখরিত হবে না। নতুন কবিকে চেকপোস্ট পার হতে দেখি। গতানুগতিক ঔচিত্যবোধ তাঁর থাকবে কেন? সে তো unrestrained। 

       এভাবেই দেখি ব্যক্তিজীবনের প্রচ্ছদের ভেতর নৈর্ব্যক্তিক জীবনের স্রোত মিশে যাচ্ছে। নিজেরই শীত ও বোদের বাঁশিতে যে জীবনের রূপ দেখেছি সেই জীবনে কত কত কণ্ঠম্বর, কত কত নীরবতা। ভেজা ভাত আর কুয়াশার খাদ্য খেয়েই বসন্তের উন্মুখ ঘোষণা। এভাবেই পরস্পর সময়-ছায়াগুলি হেঁটে গেছে। স্ববিরোধী আলোকে স্তব্ধতা ও মুখরতা বিরাজ করেছে। নিজেকে মনে হয়েছে জীর্ণ, বৃদ্ধ আবার তরুণ যুবকও। জীবন উৎস থেকে পরিণতি আবার পরিণতি থেকেই উৎসমুখে ফিরে এসেছে। শব্দে-ভাবে, কথায়-না-কথায় পেয়েছে মুক্তি। পৃথিবীময় এই মাটির দাওয়ায় বসে বসে দেখি একজন প্রাচীন প্রাজ্ঞ কবিও এই দশকের নির্ণীত তিরন্দাজ হয়ে যান—


….. কত ধ্বনি, জাগে চরাচরে—

কত বার্তা, হয় বিনিময়— 

সেই বোঝে, বার্তা যার তরে; 

 উনজনে, উদাসীন রয়।"


(মন চল নিজ নিকেতনে)


অনির্বাণ ধরিত্রীপুত্র শহরের জটিল বিন্যাসে বসেও নিজ নিকেতনের এভাবেই অন্বেষণ করেন। তখন আমারও বোধ দীপ্ত হয়। এই শীতের সময়ে বার্তা বিনিময় করতে থাকি এক সত্তা থেকে আর এক সত্তায়। অব্যাহত দৌড় শুধু। দৌড়ের মাঝেই এক-একটা ভাবের জগৎ খুলে যায়। আমার মাঝেই আবার আমি জন্মাই। নতুন আমি জেগে উঠি। নতুন কবিকে দেখি। বহু প্রাচীন কবিতার ভেতর দিয়েই যেন নতুন কবিতা উঠে আসে। বিনির্মাণ চলতে থাকে। উৎস ও অনন্তে এই বিনির্মাণ।

Kobitar Alo April Sankhya 2025

    প্রচ্ছদ ঋণঃ-  পিনাকী রায় (কণিষ্ক)