বুধবার, ৮ মে, ২০২৪

আমার রবি | রজত সরকার

আমার রবি

রজত সরকার


রাখ না তোর ম্যাড়ম্যাড়ে যতো ন্যাকা ন্যাকা সব লেখা

মাথায় থাকুন রবীন্দ্রনাথ যেন ন্যাতানো লতা পাতা।

অ্যায় গরু সর এক্ষুনি সর করিসনে কো ভুল,

ভীষণ রেগে মারব ছুঁড়ে হলুদ গাঁদার ফুল। 

আধুনিকতার দোহাই দিয়ে যারা এমন কথাই বলেন,

না জানি হয়তো কিসের জ্বালায় আপন মনেই জ্বলেন।


প্রাণের কবিকে বুঝতে হলে কিচ্ছু লাগে না আর,

শুধু নির্মল একটি হৃদয় আর সরলতা দরকার।

আম বাঙালির মনের রাজ্যে গীতার বাণীর মতোই

বিরাজ করেন রবীন্দ্রনাথ, আসুক ঝঞ্ঝা যতোই।

আহত মনের গভীর গহনে সব হারানোর জখম 

এক লহমায় দেয় জুড়িয়ে রবি ঠাকুরের মলম।


“আমি খাব না তোর পাতে” অভিমানী শিশু বলে, 

মায়ের নায়ক বীরপুরুষটি ঘোড়ার পিঠে চলে,

তুমি কী ক’রে বোঝ আমার শিশু মনের কথা?

আমার ছোট্ট মনে ফুল ফোটা ওই দুর্বোধ্য ব্যথা?

“তমিজ মিঞার গরুর গাড়ি” চ’ড়ে এ মন যেতে চায়,

বক্সীগঞ্জে পদ্মাপাড়ের হাট আমি তোমার কাছেই পাই।


ছয়টি ঋতুর এমন মাধুরী, মন কি খুঁজে পেতো?

শরৎ কালের হিমেল পরশ, কোথায় পাওয়া যেত?

ভক্তি ভরা পূজার থালি কে ধরাত আমার হাতে!

দেশমাতৃকার চরণে হৃদয় লুটাতো কোন প্রভাতে?

“একদিন যারা মেরেছিল তারে গিয়ে, রাজার দোহাই দিয়ে”

তাদের মুখোশ কে ছিঁড়ে দিত বলো কবি, দৃঢ় শক্তি নিয়ে?


যখন চৈতি হাওয়ায় বিরহী এ মন ডাকে সর্বনাশ

ঠিক তখনই কোনও পঁচিশে আসে বৈশাখ মাস।

বাঙালি মননে সব পার্বণ হে কবি তোমায় ঘিরে

তোমারই তাগিদে নব যৌবন আসে যেন ফিরে ফিরে।

গহিন আঁধারে গোপন গগনে ঘনঘটা যদি ঘেরে

গম্ভীর মেঘ গুরু গর্জনে এক বর্ষণ খুঁজে ফেরে।


কী জানি কী হয় যখন হৃদয় একলা থাকতে চায়

তোমার গানে হারানো প্রাণে কাকে যেন খুঁজে পায়!

তোমার ছন্দে এ কোন কিশোরী নেচে চলে এলোকেশে

পেখম তুলে মনের ময়ূর, আজ পথ ফিরে পেল শেষে।

তুমি না থাকলে দেশের মানুষ কোন ভাষা আজ বলত!

তোমার দেখানো পথ না থাকলে কোন পথে সে চলত!


তোমার মতো দূরদর্শী কে আছে এ সংসারে?

যে বলতে পারে আগামীর কথা এমন মনের জোরে...

“আজি হতে শতবর্ষ পরে

কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি

কৌতুহলভরে,

আজি হতে শতবর্ষ পরে!”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

  প্রচ্ছদ ঋণঃ-  অদিতি সেনগুপ্ত