শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪

সম্মিলন | শিশির আজম



মধ্যবিত্তের কবিতা


আমি চাই আপনি আমার কবিতা পড়ুন আর সন্দেহ করুন কবিতাকে

আমি চাই

আপনারা পড়ুন আমার ঋতুরক্তমাখা কবিতা

তাজা মৃতদেহের পাশে

আমি চাই

আপনারা আমার কবিতার ওপর থুতু ফেলুন

কুচি কুচি কাটুন

জ্বালিয়ে দিন আমার বিষদাঁতের কবিতা

না হলে

অন্তত অস্বীকার করুন যে এটা কবিতা



একুশ


'একুশের ওপর কেন তোমার এতোটা বিশ্বাস,' জিগ্যেস করলাম সুকান্তকে

সুকান্ত

সুকান্ত ভট্টাচার্য

আমার বন্ধু,

'একুশের ওপর কেন তোমার এতো প্যাশান কোলাজ নির্ভরতা?'


'একুশ এক নিষ্কলঙ্ক সকাল,' বললো সুকান্ত,

শুরুরও শুরু আছে

কিন্তু একুশ থেকেই তো আমাদের  সত্যিকার নিজেকে চেনা

নিজের দিকে ফেরা

আর অন্ধকার বিস্ময়ের তন্দ্রা মুছে একুশ এক গণগনে তারুন্য

এক আগ্নেয়গিরি

এক সূর্য

বিপুল তরঙ্গে সব হিংসা কলুষ কীটনাশকের শিশি ধুয়ে

ভাসিয়ে নিয়ে যায়

কেবল রয়ে যায় বিনোদিনী দাসীর হারিয়ে যাওয়া আংটি

কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্ত

কল্যাণ

আর হ্যা ভাল করে দেখো তোমার ভেতরেই  একুশ



এটাই


এটাই তো ঠিক যে মায়ের গর্ভ থেকে টেনে বের করে এনে

একটা কঙ্কালের ভেতর আমাদের ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে

যেখানে কম্পিউটার আছে দর্জিঘর আছে

আর এতো বড় বড় হাসপাতাল

যে ৫/৭টা সূর্যকে অনায়াসে মেঝেতে গড়িয়ে

টেনে এমাথা-ওমাথা করা যেতে পারে

আমাদের আত্মার সামনে

যা আমাদের সঙ্গে সঙ্গে মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে

এর পরের কাজটা তো ডোম আর ডাক্তাররা মিলে করে দেয়



বেসি স্মিথের বোন


তুমি এক নিগ্রো কন্যা

ধরে নাও

বোন

বেসি স্মিথের


তুমি

খুব দূরে নও


তোমার ভিতরে

আমি


না কি

আমার ভিতরে

তুমি


দেখো একদিন অসুখী তারাগুলো

ফিরবে

আমাদের টেবিলে

আর বধির টেবিলটাও সাহস পাবে

নিজেকে দেখার


মহাদেশের বিশাল বিশাল ক্ষত

আর খুঁত

ভবিষ্যৎ কারুশিল্প

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

  প্রচ্ছদ ঋণঃ-  অদিতি সেনগুপ্ত