শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪

সম্মিলন | রহিত ঘোষাল



দহনীয়


এক অবিরাম ঝড় বৃষ্টির রাত,

সব চোখ ক্লান্তিতে নিভে আছে,

তবে সব আগুন এখন কোথায়,

ব্যথা থৈ থৈ, 

হই হই বিজলী সঞ্চার,

হে গুরুগম্ভীর গর্জন,

তুমি কখনো দগ্ধ রোদের মধ্যে,

কখনো বা বিকেলের ফাঁকা মাঠে, পথেঘাটে,

ক্রোধ ঢেলে দাও,

পানিতে ভেসে যাও শুকনো ঝরা পাতা,

বিস্ফোরণের মধ্যে এক জন্ম, অমরত্ব,

এসো তোমার ফিনফিনে শাড়িটুকু খুলে নেই,

তোমার নাভিকুণ্ডল মরালনিন্দিত,

তুমি তো জানতে আমি কী ভীষণরকম 

দহনীয় ।।



আবহ


কাফনের উপর বৃষ্টি নেমেছে,

গিরিখাত থেকে এসেছে মেঘ,

আমাকে দূর দেশের ট্রেন ধরতে হবে,

অসংশোধিত সময় ছেড়ে

প্রবেশ করতে হবে কালরাত্রির ভেতর,

এই যে ছিনিমিনি খেলা,তৎপুরুষ,

রূপক, ভাসমান হালকা দেহ,

বীজমন্ত্র আবিষ্ট চন্দ্রাংশু,

আমাকে প্রায় দায়শূন্য করে যায়,

পরকীয়া প্রেমের তোড়ার মতো 

তীক্ষ্ণধার ....



মৃত্যুর পাঁচালী


মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু

মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু

এভাবে আর কাউকে ভালবাসতে পারিনি,

তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে

মুখ থুবড়ে পড়েছি, 

                         মহাশ্মশান,

এসো আমি এই জীবন সাজিয়েছি,

                       ঈশ্বর নয়!

ঈশ্বর নয়; তোমাকেই দেবো লবণাক্ত খাদ,

মৃত্যু তুমি আমি একই সূত্রে গাঁথা

মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু ।।



কাঁটাগাছ ও গোলাপচারা 


চোখ তুলে দেখি তোমার শরীর-

পাথরমূর্তি, তোমার পায়ের তলায় যে সমুদ্র-

হুটোপাটি, জিভে যে চুম্বন,

বালির খেলাঘরের মধ্যে 

তুলকালাম সঙ্গম, শীতস্পৃহা,

ভারী হয়ে আসে ঘুমে, 

দেয়াল উঠে যায় 

ভাগাভাগি হয়ে যায় জ্বালাপোড়া,

বিনুনি থেকে নেমে আসে মীরার ভজন,

নীচু কলকাতা জল জমলে,

একতলা প্রায় ডুবে যায়-

বাল্মীকি উঠে আসে দোতলায়-

বিদ্যুৎ চলে গেলে আঁজলায় 

করে দিও খতম লাইন, তক্ষকের গুচ্ছ প্রেম,

উশখুশ পাখিটার পোশাক খুলে যায়,

পোশাকের তলায় গ্রাম, ধানখেত, ঝর্না,

উপশিরা হু-হু করে, খৈনির ডিব্বা খালি,

মরণ ঘনিষ্ঠতা এখন ছয়লাপ।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

  প্রচ্ছদ ঋণঃ-  অদিতি সেনগুপ্ত